Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

সিঙ্গারা ফল (পানি ফল) চাষের সাফল্য

সিঙ্গারা ফল (পানি ফল) চাষের সাফল্য
ড. এস.এম. আতিকুল্লাহ১, ড. বরুন পাল২ 
কৃষিতে ‘স্মার্ট এগ্রিকালচার’ বৈশি^ক পরিবর্তনে ঝুঁকি মোকাবেলায় খাপখাইয়ে নেয়ার সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ঝুঁকি মোকাবিলায় দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সাতক্ষীরা জেলা বিশেষ ভূমিকা পালন করছে। এখানে লবণাক্ততা ও জলাবদ্ধতা কৃষি উৎপাদনে বাধার সৃষ্টি করছে। এই অবস্থা উত্তরণে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের প্রচেষ্টায় জেলায় ‘স্মার্ট এগ্রিকালচার’ পদ্ধতি অনুসরণ করে একই জমিতে পর্যায়ক্রমে ধান ও সিঙ্গারা ফল চাষে সাফল্য অর্জন সম্ভব হচ্ছে। যে জমি ও জল কৃষকের কাছে জঞ্জাল ছিল তা এখন আর্থিক সুফল এবং পুষ্টি জোগানে বিশেষ ভূমিকা পালন করছে। চাষের জমি যা বর্ষায় জলাবদ্ধ থাকে এমন জমিতে মৌসুমি সিঙ্গারা ফল চাষে সাফল্য আসছে। বিগত ৮-১০ বছর ধরে এই অঞ্চলে সিঙ্গারা চাষ সম্প্রসারণ হচ্ছে। পর্যবেক্ষণে দেখা যায় এই ফল সামান্য যত্ন ও ন্যূনতম খরচে চাষ করা যায়। বিশেষ করে কাজের সুযোগ সৃষ্টি ও আয় বৃদ্ধিতে সিঙ্গারা ফল চাষ বেশ অবদান রাখছে। তথ্য মতে, সুজলা-সুফলা সাতক্ষীরা জেলায় সিঙ্গারা ফল চাষ ও উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। জেলায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী ২০২১-২২ সালে ১০৬ হেক্টর জমিতে ২৭৫৫ মেট্রিক টন সিঙ্গারা উৎপাদিত হয়েছে। 
প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ঝুঁকি মাড়িয়ে প্লাবিত জমিতে ফসল উৎপাদন সহনশীল কৃষির বাস্তব উদাহরণ। জমিতে জল আসতেই হালকা চাষ দিয়ে বীজ বপন করা হয়। ক্রমান্বয়ে পানি বাড়ে সাথে সিঙ্গারা গাছও বৃদ্ধি পেতে থাকে। গাছের পাতা জলে ভাসতে থাকে। বাড়তি জল ফসলের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায় না। দো-আঁশ মাটিতে এ উদ্ভিদ ভাল জন্মে। মূলত সাতক্ষীরার জলবায়ু সিঙ্গারা চাষের জন্য উপযোগী, উদ্ভিদ জন্মানোর অভিযোজন ক্ষমতা রয়েছে। 
তাজা ফল আহারে কচকচে এবং নরম যা তৃষ্ণানিবারক। অভাব-অনটনে রান্না করে ডাল বা জাউ খাওয়া হয়। খাবার টেবিলে বিকল্প পরিবেশনায় রসনা তৈরি করে। এই ফল ডায়াবেটিক রোগ নিরাময়ক। পানাসক্ত ব্যক্তির মাতলামো নিবারণে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। চীনদেশে পানিফল জ্বর নিরাময়ক। ফল শুকিয়ে গুঁড়া করে আটা হিসেবে ব্যবহার করা হয়। প্রাচীনকাল থেকেই সামাজিক অনুষ্ঠান পূজা তথা ঈশ্বরের প্রতি শ্রদ্ধানিবেদনের মাধ্যম হিসেবে এই ফলকে বিবেচনা করা হয়। হিন্দু সমাজে এই ফলের চূর্ণ বিভিন্ন ধরনের ধর্মীয় উৎসবে ব্যবহৃত হয়। ভারতে এই চূর্ণকে “সিঙ্গারা-কা-আটা” নামে অবহিত করে। এই ফল সকালের নাশতায়, দুপুরের পিপাসা নিবারণ তথা টেবিলে অন্যান্য ফলের সাথে পরিবেশন করা যেতে পারে। 
শিশুর প্রিয় পানিফল : কচকচা ফল শিশুরা খেতে খুব পছন্দ করে। কালিগঞ্জ উপজেলার শিশু-কিশোরের মধ্যে মৌসুমে বেশ আমোদ-ফুর্তি লক্ষ করা যায়। শিশুরা কাটি-কুটি করে ফল ত¦ক খোটাখুটিতে বেশ আনন্দ পায়। তাই এই ফলকে গ্রামীণ পুষ্টির সহজ যোগানদার বলা যায়। সাধারণ গ্রামীণ শিশু-কিশোররা দামি ফল খেতে পারে না। তাদের বিকল্প পুষ্টির সুযোগ সৃষ্টি করে। খাদ্যোউপযোগী প্রতি-১০০ গ্রাম পানিফলে ৮৪.৯ গ্রাম জলীয় অংশ, মোট খনিজ পদার্থ ০.৯ গ্রাম, ০.৬ গ্রাম আঁশ, ৬৫ কিলো ক্যালরি খাদ্যশক্তি, ২.৫ গ্রাম আমিষ, ০.৯ গ্রাম চর্বি , ১১.৭ গ্রাম শর্করা, ১০ মি. গ্রাম ক্যালসিয়াম, ০.৮ মিলিগ্রাম লৌহ, ০.১৮ মিলিগ্রাম ভিটামিন বি-১, ০.০৫ মিলিগ্রাম ভিটামিন বি-২  এবং ১৫ মিলি গ্রাম ভিটামিন সি বিদ্যমান থাকে।
জাত পরিচিতি ও বাজারমূল্য : ভারত ও চীন দেশে এই ফল তিন হাজার বছর পূর্বে জন্মানোর ইতিহাস রয়েছে। এটি দ্বিবীজপত্রী, আবৃতবীজী, বর্র্ষজীবী বীরুৎ প্রকৃতির উদ্ভিদ। এই উদ্ভিদের বৈজ্ঞানিক নাম ঞৎধঢ়ধ নরংঢ়রহড়ংধ জড়ীন.। এই জলজ উদ্ভিদ ঞৎধঢ়ধপবধব বা ওয়াটার চেষ্টনাট গোত্রের সদস্য। ইংরেজিতে ডধঃবৎ পযবংঃহঁঃ শব্দের চয়ন দেশীয় নাম পানিফল। জলজ পরিবেশে পানির নিচে চাষ হয় বিধায় পানিফল বলা হয়। আবার এ ফলের আকার সিংগারার ন্যায় তাই সিঙ্গারা (ঝরহমযৎধ) নাম দেয়া হয়। ফলের আকৃতির কারণে লজেন্স বা হিরার টুকরো ফলও বলে থাকে। এ বছর এরই মধ্যে স্থানীয় বাজারে কেজি প্রতি ২৫-৩০ টাকা দরে বেচাকেনা শুরু হয়েছে। সাতক্ষীরার সিঙ্গারা ঢাকা, নওগাঁ, খুলনা এবং রাজশাহী অঞ্চলে বাজারজাত করা হয়। এই ফল শুকিয়ে গুঁড়া করে আটা হিসেবে ব্যবহার ও সংরক্ষণ করা যায়। ভারতসহ পার্শ্ববর্তী দেশে গুঁড়ার চাহিদা তৈরি হচ্ছে। তাই ফল উৎপাদন লাভবান করতে উন্নত চাষ পদ্বতি, আধুনিক জাত ও ফল সংরক্ষণের প্রযুক্তি আবিষ্কার করা দরকার। 
এমন নয় যে সিঙ্গারা সাতক্ষীরা জেলার নিজস্ব ফসল। কৃষি বিজ্ঞানীদের সৃজনশীল চিন্তা এবং সম্প্রসারণকর্মী ও কৃষকের প্রচেষ্টায় সাতক্ষীরা জেলায় সিঙ্গারা চাষের অনেক সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। আগামীর কথা বললে সাতক্ষীরা অঞ্চলকে নিয়ে যুতসই “ক্লাইমেট স্মার্ট” কৃষির পরিকল্পনা করতে হবে। তাই আগামীর কৃষির জন্য অঞ্চলভিত্তিক কর্মসূচি প্রণয়ন করতে হবে। বলা হয় এই সাতক্ষীরা অঞ্চলের কৃষক জলাভূমিতে সিঙ্গারা আর প্রান্তিক অফলা জমিতে স্থায়ী ফল বাগান তৈরি করছে। এতে জমি, জল এবং স্থানীয় সম্পদের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত হচ্ছে। কৃষিতে ঝুঁকি মোকাবিলার প্রবণতা, জমির বহুমুখী ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে।         কৃষকের হাতে নগদ অর্থের জোগান হচ্ছে; মুখে ফুটছে হাসি।

লেখক : ১এগ্রিকালচার স্পেশালিস্ট, জাতীয় ভূমি জোনিং প্রকল্প; ২আন্তর্জাতিক খাদ্যনীতি গবেষণা প্রতিষ্ঠান, দিল্লি। মোবাইল : ০১৭১২৮৮৯৯২৭, ই-মেইল : mdatikullah@yahoo.com


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon